• মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৭ জৈষ্ঠ ১৪২৮

সারা দেশ

হৈইত হোত 'শব্দ, এখন লোকারণ্যে

  • ''
  • প্রকাশিত ৩০ এপ্রিল ২০২৪

তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা:

প্রযুক্তির উৎকর্ষতায়,বৈশাখি ফসলের মাড়াই খলায়,নেই আর পাকাঁ ধানের কাটা মুঠের পাড়ার (স্তুপ)। পাকাঁ ধানের ডেটা থেকে ধান বিচ্ছিন্ন করানোর কাজে, এখন আর প্রয়োজন হয় না,গরু- মহিষের পদচারণা। এর কারণে হৈইত হোত শব্দ উচ্চারণ করা হয় না।এই শব্দ এখন লোকারণ্যে। কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনের দ্বারাই চলে পাকাঁ ধান কাটাই,মাড়াই। এর ফলে শ্রমিক সংকট লাগব হলেও, নারী শ্রম এখন উল্লেখযোগ্য।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মাটিয়ান হাওর পাড়ের অধিকাংশ ধান খলা, সরজমিন ঘুরে দেখা যায়,রয়েছে সোনালি ধানের টাল, অগোছালো খের- কুডা। তাই কৃষান-কৃষানীরা তাপদাহনে পুড়ে শুধু ধান শুকনোতে ব্যবস্ত সময় পাড় করছেন তাঁরা ।

উপজেলার কৃষি সূত্রে জানা যায়, এবার হাওরে (প্রায়) ১৭হাজার ৪শত হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষানাদ করা হয়েছে। আর এ সব কাজে, রোপণ থেকে সোনালি ধান গোলায় উঠানো পর্যন্ত, প্রযুক্তির উৎকর্ষতার অবদান রয়েছে বেশি। উদাহরণ স্বরূপ ধান থেকে খর খুডাসহ সুছা -পোং পরিষ্কারের জন্য, এখন আর প্রাকৃতিক বাতাসের উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল না হলেও চলে। রয়েছে বিকল্প ব্যবস্থা, যেমন ইলেকট্রনিক ফ্যান বা ইঞ্জিন চালিত ফ্যানের মাধ্যমে পরিষ্কার করা যায় । কাটাঁই, মাড়াই,রোপণ করাসহ,প্রযুক্তির যন্ত্রের মাধ্যমে অল্প সময়ে স্বল্প খরচে করা সম্ভব হচ্ছে।

হাওর পাড়ের কৃষক আক্তার হোসেন আখঞ্জী বলেন,আমি তিন কেয়ার (৯৯শতাংশ) জমি চাষাবাদ করেছি। তা একদিনেই কাটাঁই, মাড়াই করেছি, এতে সময় ও ব্যয় কমেছে আমার। ৫০ মন ধান পেয়েছি । একদিনেই কাটাঁই, মাড়াই করে,বাড়িতে নিয়ে এসেছি। আর এসব সম্ভব হয়েছে প্রযুক্তির ছোঁয়ায়।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারেই দ্বারাই সম্ভব হয়েছে। তাই তাকে বলি আমরা কৃষক বান্ধব সরকার। এর , তার বাস্তব উদাহরণ , কৃষকের কৃষি কাজে,অর্থ সাশ্রয়ের জন্য,৭০% ভর্তুকি দিয়ে, (কম্বাইন্ড হারভেস্টার) মেশিন কৃষকদের মাঝে বিতরণ করছেন তিনি । এর ফলে লাগব হয়েছে শ্রমিক সংকট। এর কারণে কৃষকের ভাগ্যে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে।

কৃষক লালশাহ্ বলেন, এখন আর গভীর রাতের ঘুম ভেঙে উঠতে হয় না। নির্জন পথে হাওরাঞ্চলের পাদদেশে একাকী ছুটতে হয় না মহিষ-গরু নিয়ে। প্রয়োজনীয় কাজ সেরেও কৃষক কার্যাদি সম্পূর্ণ করা সম্ভব হয়। আর এসব হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। প্রযুক্তি উদ্ভাবনে কৃষির কার্যাদি আজ, অতি সহজতর হয়ে ওঠেছে, এর ফলে আমাদের অনেকটাই কৃষি কাজে সাশ্রয় হয়েছে। তবে অনেক কিছু
দৃশ্য হাড়িয়ে যাচ্ছে। এখন আর হাওরের পাদদেশে ধান কাটার শ্রমিকরা উরা (ঘোয়ালা) বেঁধে থাকার দৃশ্য দেখা যায় না। কৃষকদের ও পদচারণ ক্ষনিকমাত্র। কিছু এলাকায় থাকলেও, সব জায়গায় এমন দৃশ্য চোখে পড়ে না। জিলাপি- মুড়লি দোকানীদের ব্যবসাও বিলপ্তির পথে। রাতের চাঁদের আলোয় জমায়েত হয়ে, কিছসা কাহিনীর গল্প দেখা যায় না। প্রযুক্তি যেমন বেশি দিয়েছে। কম হলেও অনেক কিছু কেড়ে নিয়েছে।

তাহিরপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা হাসান উর দৌল্লা বলেন, কৃষকের সুবিধার্থে,কৃষি অধিদপ্তর সব সময় আন্তরিক, যে কোনো সমস্যায় কৃষকের পাশে রয়েছে এবং থাকবে। যার বাস্তব প্রমাণ, ৭০% ভর্তুকির মাধ্যমে, কাটাঁই ও মাড়াই মেশিন (কম্বাইন্ড হারভেস্টার) কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। খুব কম সময়ে মধ্যে কৃষকের কষ্টার্জিত ফসল ঘরে তুলতে পারে।এ কারণে আজ অল্প সময়েই ৮৫% ধান কাটা হয়েছে। এছাড়াও তিনি আরও বলেন, এবার হাওরে বোরোধান বাম্পার ফলন হয়েছে।আমাদের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল (প্রায়)৬৭হাজার মে:টন চাউল। আশা করছি এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads